বর্তমান সময়ে দক্ষতা দিয়ে কাজ করতে পারলে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা খুব কঠিন কোনো ব্যাপার না। মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায় দুই ভাবে করা যায় অনলাইনে ও অফলাইনে। কিন্তু আপনি কিভাবে আয় করতে পারবেন এটা একান্তই নির্ভর করে আপনার কাজের দক্ষতা ও সময় এর উপর।
বর্তমান সময়ে অফলাইনের পাশাপাশি বেশি টাকা আয় করার সবচেয়ে বড় একটি মাধ্যম হলো অনলাইন। তবে অনলাইনে সফলতার সংখ্যা অনেক কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে আগানোর কারনে অনলাইনে থেকে আয় করতে পারছে না।
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কিভাবে আপনি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। এখানে আমরা অনলাইনের মাধ্যমে ও অফলাইনের মাধ্যমে আয়ের উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার জন্য আপনি অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও কাজের দক্ষতা তৈরি করে নিতে পারেন। যদি অফলাইনে আপনার কোনো চাকরি বা ব্যবসা থাকে তাহলে বাকি সময় টা অনলাইনে কাজ করে আয় বাড়াতে পারেন। যেমন টা আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি মাসে ৫০ হাজার টাকা আপনি অনলাইনে অফলাইনে দুই ভাবে আয় করতে পারবেন।
নিচে আমরা অনলাইনে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয়ের উপায় ও অফলাইনে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয়ের কয়েকটি উপায় দিয়ে দিলাম:
অনলাইনে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
অনলাইনে খুব সহজেই মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যায়। যার মধ্যে কয়েকটি উপায় হলো –
১. ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয়

ফ্রিল্যান্সিং শব্দের সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। ঘরে বসে অনলাইনে কাজ করে অর্থ আয়ের জন্য ফ্রিল্যান্সিং সবচেয়ে ভালো একটি উপায়। ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সুবিধা হলো এখানে আপনি আপনার অবসর সময় ব্যবহার করে আয় করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোনো ধরণের ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন নেই। কাজের ধরণ অনুযায়ী প্রতিদিন ৫-৬ ঘন্টা কাজ করতে হবে। তবে কাজ করার জন্য ভালো একটি ইন্টারনেট কানেকসন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ এর দরকার হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন?
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনার যে কোনো কাজের উপরে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পরিপূর্ণ ভাবে দক্ষ হয়ে গেলে মার্কেটপ্লেস গুলোতে গিগ প্রকাশ করতে হবে। জনপ্রিয় কয়েকটি মার্কেটপ্লেস হলো –
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন কাজ শেখা ভালো
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইলে আপনার জানা দরকার এখানে কোন কোন কাজ গুলো বেশি জনপ্রিয় ও চাহিদাসম্পন্ন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের কয়েকটি চাহিদাসম্পন্ন কাজ হলো –
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- রাইটিং
- ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট
- প্রোগ্রামিং
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ওয়েবসাইট ডিজাইন
উপরের কাজ গুলো ছাড়াও অনেক কাজ পাওয়া যায়। তবে উপরের কাজ গুলোর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরো পড়ুন: অনলাইন ব্যাংকিং কাকে বলে? সুবিধা, অসুবিধা ও গুরুত্ব
২. অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে আয়
আপনি যদি নিয়মিত অনলাইনে কানেক্টেড থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই কোর্স সম্পর্কে শুনেছেন। অনলাইনে কোর্সের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে দক্ষ হয়ে থাকেন তবে উক্ত বিষয়ের উপরে ভিডিও আকারে কোর্স তৈরি করতে পারেন।
মনে করুন – আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং বেশ ভালো ভাবে বুঝতে ও বুঝাতে পারেন। এখন, ভিডিও আকারে ২০ বা ২৫ টা ভিডিও এর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত কোর্স তৈরি করুন। যেখান থেকে কোনো ব্যাক্তি নির্দিষ্ট টপিক সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবে। কোর্স তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হওয়া ছাড়া কোনো কিছু প্রয়োজন পরে না।
কোর্স কিভাবে তৈরি করবেন?
আপনি যদি কম্পিউটারে কোনো সফটওয়্যার সম্পর্কিত কোর্স তৈরি করেন তবে আলাদা ভাবে কোনো ক্যামেরা প্রয়োজন হবে না। শুধু স্ক্রিন রেকর্ড করে ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। তবে অন্য কোনো একাডেমিক বিষয় যদি হয় তবে ক্যামেরা দিয়ে কোর্স তৈরি করতে পারেন।
কোর্স বিক্রি করবেন কিভাবে?
কোর্স বিক্রি করার জন্য আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারেন। অথবা আপনি চাইলে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যেখান থেকে যে কেউ চাইলে আপনার কোর্স সম্পর্কে জানতে ও ক্রয় করতে পারবে।
৩. ব্লগিং করে আয়

অনলাইনে ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া মাসে ৫০ হাজার টাকা আয়ের আরো একটি উপায় হলো ব্লগিং করে আয় করা। ব্লগিং শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার কিছু অতিরিক্ত দক্ষতার দরকার হবে যেগুলো হলো:
- ওয়েবসাইট রক্ষনাবেক্ষন
- এসইও
- রাইটিং
উপরের দক্ষতা গুলো আপনি ইউটিউব ব্যবহার করে শিখে নিতে পারবেন। ব্লগিং শুরু করার জন্য একটি ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করার জন্য আপনার ২-৩ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। তবে আপনার যদি ইনভেস্ট করতে সমস্যা হয় তবে Blogger থেকে ফ্রি তে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
ব্লগিং করে আয় কিভাবে করবেন?
ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনার লেখা প্রকাশ করতে হবে। আপনি চাইলে নিজেই লিখতে পারেন অথবা কোনো রাইটার হায়ার করে লিখিয়ে নিতে পারেন। মানসম্মত ২৫-৩০ টি কনটেন্ট প্রকাশ করার পরে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করে দিন।
যদি আপনার কন্টেন্ট ভালো হয় তবে গুগল আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিবে। বিজ্ঞাপন থেকে আয় করা টাকা আপনি পাবেন। তবে ব্লগিং থেকে আয় করা বেশ ধৈর্যের কাজ। যদি আপনার ধৈর্য না থাকে তবে ব্লগিং না করা ভালো।
আরো পড়ুন: মোবাইল ব্যাংকিং কি? মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা
৪. ভিডিও কনটেন্ট দিয়ে আয়
বর্তমানে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে সফল হওয়া অনেক সহজ। ভিডিও কনটেন্ট পাবলিস করার জন্য পূর্বে শুধু মাত্র ইউটিউব প্লাটফর্ম থাকলেও বর্তমানে ফেসবুক, টুইটার, টিকটক, ইন্সটগ্রাম তার ক্রিয়েটর দের প্রচুর পরিমানে টাকা পেমেন্ট করে।
আপনার দক্ষতা অনুযায়ী যে কোনো ধরণের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। যদি বড় ভিডিও তৈরি করতে না চান তবে ৩০ সেকেন্ড এর শর্টস ভিডিও দিয়েও আপনি আয় করতে পারবেন। আপনি ইউটিউবে ঢুকলে হাজার হাজার কন্টেন্ট তৈরির আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
ভিডিও বানাতে কি কি লাগে?
ভিডিও তৈরি করার জন্য আপনার কিছু দক্ষতা থাকলে আপনাকে কোনো টাকা ব্যায় করতে হবে না। যেগুলো হলো:
- ভিডিও এডিটিং
- ভালো মানের কম্পিউটার/ল্যাপটপ
- স্ক্রিপ্ট রাইটিং
- প্রেজেন্টেসন
- ফটোশপ ডিজাইন
উক্ত কাজ গুলো সম্পর্কে প্রথমে ভালো ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে তবেই ভিডিও তৈরি তে মনোযোগ দিবেন। অন্যথায় আপনার বাজেট থাকলে উপরের কাজ গুলো অন্যদের দিয়ে করাতে পারেন।
আয় কিভাবে করবেন?
ফেসবুক বা ইউটিউব যে কোনো মাধ্যম থেকেই হোক না কেন আপনার ভিডিও তে কোনো কপি ফুটেজ ব্যবহার করা যাবে না। চ্যানেল এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু রিকোয়্যারমেন্ট আছে যেগুলো পূরণ হওয়ার পরে আপনি আয়ের জন্য বিবেচিত হবেন।
৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার জন্য বেছে নিতে পারেন এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর মানুষ অনেক টাকা আয় করছে। এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো আপনাকে অন্য কোম্পানি বা ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পন্য বিক্রি করে দিতে হবে। পন্য অনুযায়ী বিক্রির পর আপনাকে কমিশন দেয়া হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশেও এফিলিয়েট এর সুজোগ তৈরি করে দিচ্ছে রকমারি। আপনার যদি আয় কম চান তবে রকমারি থেকে এফিলিয়েট করে আয় করতে পারবেন। তবে যদি বেশি টাকা আয় করতে চান তবে আমার সাজেসন থাকবে Amazon করা।
Amazon এফিলিয়েট কিভাবে করবেন?
আমাদের দেশে এমাজন এখনো চালু করা হয়নি তাই আপনি বাংলাদেশে কোনো পন্য বিক্রি করতে পারবেন না। আপনাকে বিদেশের মানুষের কাছে বিক্রি করতে হবে। এজন্য শুরুতেই আপনাকে US টার্গেট করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। সেখানে প্রোডাক্ট এর রিভিউ আর্টিকেল প্রকাশ করতে হবে ও এফিলিয়েট লিংক। যখন আপনার দেয়া লিংক থেকে কেউ প্রোডাক্ট ক্রয় করবে তখন কমিসন পাবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে কি কি লাগে?
এফিলিয়েট মার্কেটিং বেশ জটিল একটি বিষয়। যদি আপনার দক্ষতা না থাকে তবে এ কাজে আপনি সফল হতে পারবেন না। তাই শুরু করার পূর্বেই যেসব দক্ষতা অর্জন করা জরুরি –
- ওয়রবসাইট ম্যানেজমেন্ট
- এসইও
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- আর্টিকেল রাইটিং
- ভালো পরিমান বাজেট
৬. অনলাইনে টিউশনি করে আয়
বর্তমানে অনলাইনে টিউশনি ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়। আপনার পড়ানোর মতো দক্ষতা থাকলে চেষ্টা করতে পারেন অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে টিউশনি করানোর। অনলাইনে সহজেই অনেক শিক্ষার্থী পাওয়া যায় যা অফলাইনে অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার বটে।
অনলাইনে টিউশনি কিভাবে শুরু করবেন?
অনলাইনে টিউশনি শুরু করার জন্য একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিন। নিয়মিত সেখানে লাইভ ক্লাস নিন। আপনি যে ধরণের বিষয় পড়াবেন উক্ত ধরণের গ্রুপ গুলোতে জয়েন হয়ে নিবেন। সেখান থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী খোজা ছাড়াই পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুন: সরকারি ভাবে ইউরোপ যাওয়ার উপায়
৭. অনলাইনে ব্যবসা করে আয়
ব্যবসা যদি ভালো ভাবে বুঝতে পারেন তবে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনলাইনে প্রচুর পরিমানে ব্যবসা রয়েছে। আপনি চাইলে যে কোনো কিছু ক্রয় করে বিক্রয় করতে পারেন। যদি আপনার ইনভেস্ট করার টাকা না থাকে তবে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য আপনার অবশ্যই মার্কেটিং শিখে নিতে হবে।
কি কি ব্যবসা লাভজনক অনলাইনে?
অনলাইনে অনেক ব্যবসা লাভজনক তবে আপনি চাইলে নিচের ব্যবসা গুলো চেষ্টা করতে পারেন –
- ড্রপশিপিং
- ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান
- পুরাতন জিনিস বিক্রয়
- বই বিক্রয়
- দৈনন্দিন জিনিস বিক্রয়
৮. সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে ইনকাম করতে পারেন মাসে ৫০ হাজার টাকার বেশি। আপনি যদি নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকেন তবে নিশ্চিত ভাবেই কিছু ব্যাক্তি কে চিনে থাকবেন যারা সোশ্যাল মিডিয়া তে ইনফ্লুয়েন্স করে থাকেন।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার কিভাবে হবেন?
সোশ্যাল মিডিয়া তে নিয়মিত একটিভ থাকতে হবে। বিভিন্ন ট্রেন্ডিং টপিকের উপরে ভিডিও অথবা লেখার মাধ্যমে আপনার মতামত প্রকাশ করতে হবে। যদি ভালো ভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারেন তবে খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রচুর পরিমানে ফলোয়ার অর্জন করতে পারবেন।
৯. ভয়েস ওভার করে আয়
আপনার যদি সুন্দর করে কথা বলার দক্ষতা থাকে তবে ভয়েস ওভার করে আয় করতে পারবেন। আপনি ইউটিউব বা ফেসবুকে বা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে অনেক ভয়েস শুনে থাকবেন। এ ধরণের ভয়েস গুলো মূলত ভয়েস আর্টিস্ট রা করে থাকেন। ভয়েস ওভার করে মাসে আপনি ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে পারবেন।
কিভাবে ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হবেন?
ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই ভালো ভয়েস থাকতে হবে। ভালো ভয়েস এর পাশপাশি শব্দের উচ্চারণ সঠিক ভাবে জানতে হবে। শুরুতেই আপনি সঠিক ভাবে পারবেন না এজন্য অনলাইনে থেকে কয়েকটা কোর্স করে নিতে পারেন।
ভয়েস ওভার করে আয় কিভাবে করবেন?
ভয়েস ওভার করে আয় করার জন্য আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে চেষ্টা করতে পারেন। সেখান থেকে অনেক ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন। এ ছাড়াও ফেসবুকে এমন অনেক গ্রুপ আছে সেখানে আপনাকে যুক্ত থাকতে হবে। তাহলে ফেসবুক থেকেও আপনি অনেক ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন।
১০. লাইভ স্ট্রিম করে আয়

অনলাইনে লাইভ স্ট্রিম করে আয় করতে পারেন। আপনি যদি একজন গেমার হয়ে থাকেন তবে বিষয় টি আরো বেশি সহজ হবে। আপনি গেম খেলার সময় ইউটিউব বা ফেসবুকে লাইভ করতে পারেন। শুধু যে গেম লাইভ করা যায় বিষয় টা এমন নয়। আপনি নিয়ম অনুযায়ী লাইভ করতে পারেন। লাইভের মাধ্যমে আলাদা একটি আয় হয়।
বর্তমানে ফেসবুক বা ইউটিউব দুটি মাধ্যম থেকেই লাইভ স্ট্রিম করে আয় করার সুজোগ রয়েছে। যদি লাইভ স্ট্রিম করে আয় করার ইচ্ছা থাকে তবে এখান থেকে মাসে আপনি ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে পারবেন।
অফলাইনে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
উপরে আমরা ইতিমধ্যে ১০ টি অনলাইনে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে জানালাম। কিন্তু সবাই তো আর অনলাইনে এর কাজ ভালোভাবে জানেন না। অনেকেই আবার অনলাইনে কাজ করতে আগ্রহী হতেও চান না। সেক্ষেত্রে আমরা এখানে আরো ১০ টি অফলাইন পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো যেখান থেকে আপনি মাসে ৫০ হাজার টাকা বা তার চেয়েও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন –
১. কোচিং সেন্টার
শিক্ষা প্রায় প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কোচিং সেন্টার ব্যবসা অত্যান্ত জনপ্রিয়। শহর অথবা গ্রাম প্রতিটি স্থানে এখন কোচিং সেন্টার পরিচালিত করা হয়। কোচিং সেন্টার আপনি যে কোনো ধরণের দিতে পারেন। হতে পারে সেটা স্কুলের একাডেমিক বই এর পড়া অথবা চাকরির প্রস্তুতি।
তবে কোচিং সেন্টার দেয়ার জন্য আপনাকে লাইসেন্স করে নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কোচিং সেন্টার চালু করতে পারবেন না। কোচিং সেন্টারে আপনার ভালো কিছু শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। যদি দাড় করাতে পারেন তবে মাসে ৫০ হাজার টাকার চেয়েও অনেক বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
২. বিউটিউ পার্লার – সেলুন

বর্তমানে মানুষ আর্টিফিসিয়াল সৌন্দর্যের প্রতি বেশি নির্ভরশীল। আপনি যদি কোনো বিউটি পার্লারে প্রবেশ করেন তবে সেটা নিশ্চিত ভাবেই বুঝতে পারবেন। আপনি চাইলে ইনভেস্ট করে বিউটি পার্লার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে অধিক বাজেট যদি না থাকে তবে সেলুন ব্যবসা দিতে পারেন।
বর্তমানে মানুষ চুলের স্টাইল নিয়ে অনেক টাকা খরচ করে। আপনি নির্দিষ্ট ক্যাটাগেরির কিছু ছেলেদের টার্গেট করে সেলুন দিতে পারেন।
আরো পড়ুন: বিকেন্দ্রীকরণ কি? বিকেন্দ্রীকরণ এর সুবিধা অসুবিধা
৩. টেইলরিং সার্ভিস
আপনার যদি দক্ষতা থাকে সেলাই মেশিন এর উপরে তাহলে টেইলরিং সার্ভিস দিতে পারেন। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এই কাজ টি জনপ্রিয়। কারণ এটার জন্য আপনাকে কোনো দোকান দিতে হবে না বরং বাসায় বসে টেইলরিং সার্ভিস দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরণের নতুন ডিজাইনের কাপড় তৈরি করতে পারেন। আপনি কাজে যত বেশি দক্ষ হবেন কাজের প্রসারতা ততো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।
৪. কৃষি কাজ – পশুপালন

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ কোনো না কোনো ভাবে কৃষি পেশার সাথে সম্পৃক্ত। আপনি যদি গ্রামে থাকেন তবে পশুপালন অথবা কৃষি কাজ উভয় কাজ করে মাসে ৫০ হাজার টাকার চেয়েও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
কৃষি কাজের ক্ষেত্রে অদক্ষ হয়ে থাকলে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে পারেন। বিভিন্ন ধরণের সবজি, ফল চাষ ইত্যাদি তে প্রচুর পরিমানে লাভ করা যায়। এ ছাড়াও আপনি চাইলে যেসব কাজ করতে পারেন –
- মুরগি পালন
- গরুর খামার
- ধান, গম, পাট চাষ
- সবজি চাষ
- ফলের চারা
- ফল উৎপাদন করা
৫. দোকান ব্যবসা
দোকান ব্যবসা করতে পারলে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। তবে দোকান ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার বাজেট কি পরিমান আছে সেটা দেখতে হবে। একটি দোকান ভাড়া নেয়া ও পণ্য সাজানো পর্যন্ত প্রচুর পরিমান ব্যায়বহুল একটা ব্যাপার। তবে বাজেট কম থাকলে ছোট একটা মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ, নগদ ইত্যাদির দোকান দিতে পারেন। দোকান ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব দোকানে লাভ বেশি হয় সেগুলো হলো:
- ফার্মেসি
- মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা
- কসমেটিকস দোকান
- ইলেক্ট্রনিক দোকান
- কাপড়ের দোকান
- কাচামাল দোকান
৬. ফটোগ্রাফি

বর্তমানে ফটোগ্রাফি করে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনাকে ফটোগ্রাফি তে দক্ষ হতে হবে ও ভালো মানের একটি ক্যামেরা থাকতে হবে। দামি মোবাইল ক্যামের দিয়ে হবে না বরং ক্যামেরা দরকার হবে। ফটোগ্রাফি আপনি অনেক ভাবে করতে পারেন।
আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্স ভাবে ফটোগ্রাফি করতে পারেন অন্যথায় কোনো সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারেন। দুই ক্ষেত্রেই আপনি ভালো পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন। ফটোগ্রাফি তে যেসব কাজ পাওয়া যায় –
- ফিল্ম ফটোগ্রাফি
- ওয়েডিং ফটোগ্রাফি
- ইভেন্ট ফটোগ্রাফি
- টুর ফটোগ্রাফি
এ ছাড়াও নিজের ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইটে বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করতে পারেন।
৭. ইভেন্ট প্লানার
বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট পরিচালনা করার জন্য একজন ইভেন্ট প্লানার এর ব্যাপক চাহিদা থাকে। ইভেন্ট প্লানার এর কাজ হলো যে কোনো ইভেন্ট কে সঠিক ভাবে পরিচালিত করা। হতে পারে সেটা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান বা জন্মদিনের অনুষ্ঠান।
ইভেন্ট প্লানিং থেকে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন। তবে ইভেন্ট প্লানার হওয়ার জন্য দক্ষ অবশ্যই হতে হবে। পাশাপাশি আপনার অনেক ক্যাটারিং জন্য লোকের প্রয়োজন হবে।
আরো পড়ুন: ব্যবস্থাপনা কাকে বলে? ব্যবস্থাপনা কত প্রকার ও কি কি
৮. হোম মেইড ফুড
আপনি কি রান্না করতে পছন্দ করেন? আপনার রান্না যদি ভালো হয় তবে আপনি চাইলে হোম মেইড ফুডের ব্যবসা করতে পারেন। এ ধরণের ব্যবসা আপনি বাসায় বসে করতে পারবেন। যদি আপনি একজন নারী হয়ে থাকেন তবে এ কাজ টি আপনার জন্য বেশ ভালো হবে।
হোম মেইড ফুড তৈরি করে নিজ এলাকার মধ্যে ডেলিভারি করতে পারেন। অনলাইনে মাধ্যম অর্ডার নিয়ে খাদ্য তৈরি করে নিজ এলাকায় ডেলিবারি দিয়ে অনেক টাকা আয় করতে পারেন।
৯. কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার

বর্তমানে মানুষ কম্পিউটার শেখার প্রতি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনার যদি কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকে তবে কম্পিউটার শেখানোর একটি সেন্টার দিতে পারেন। সেখানে বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স তৈরি করতে পারেন। আপনার যদি দক্ষতা কম থাকে তবে একজন দক্ষ লোক নিয়োগ দিতে পারেন।
পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং শিখাতে পারেন। দেশের বেশিরভাগ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আগ্রহী। একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার অথবা স্টুডিও দেয়ার জন্য বেশ ভালো একটা বাজেট ইনভেস্ট করতে হবে।
১০. ক্যাবল ইন্টারনেট
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সব স্থানে ইন্টারনেট ব্রডব্রান্ড কানেকসন পৌছে গেছে। আপনি চাইলে নিজ এলাকা তে ডিশ অথবা ইন্টারনেট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে অবশ্যই বাজেট এর ব্যাপারে নিশ্চিত একটি ধারণা নিয়ে নিবেন। এসব ব্যবসায় লাভের পরিমান অনেক বেশি থাকে।
আমাদের শেষ কথা
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায় আর্টিকেলে আমরা অনলাইনে ও অফলাইনে অনেক গুলো উপায় সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানালাম। আয়ের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে আপনি ইনভেস্ট করার পরের দিন থেকেই আয় শুরু হবে না। আয় করার জন্য আপনার কাজ করে যেতে হবে ধৈর্য ধরে। আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।